বাগান করার সহজতম উপায়

সবজি বাগান করতে হলে প্রতিবার মাটি তৈরি করা, আগাছা উপড়ানো, জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা অনেক ঝামেলার কাজ।
এত সব ঝামেলা এড়িয়ে অনেকেই বাগান করতে উৎসাহী হন না।
ব্যাস্ততার কারণে সময় হয় না ও ঝামেলা ছাড়াই যারা বাগান করতে চান তাদের জন্য আছে

 শর্টকাট পদ্ধতিঃ ব্যাগ গার্ডেনিং।

 অধিকাংশ নগর বাগানীরা প্রথমদিকে বাগানের মাটি তৈরি সারের অনুপাত বোঝা এ সম্পর্কে তেমন ধারণা রাখেন না।
ব্যাগ গার্ডেনিং এ মাটি এবং সারের মিশ্রণ থাকে সঠিক অনুপাতে। তাই বাগানের পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই সফল ভাবে বাগান করা সম্ভব।
মাটির উর্বরতা শক্তি যেমনই থাক না কেন ব্যাগ গার্ডেনিং এ সার এবং মাটির অনুপাতে ভারসম্য থাকার
এবং নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বাগান করার কারণে ফলন হয় অনেক বেশি।
আর প্রতিবার ফসল উৎপাদনের পর কিংবা গাছ মরে গেলে, পুরনো বস্তা ফেলে দিয়ে তার স্থলে নতুন মিশ্রনের বস্তায় চাষ করলেই হল।
ভালো ফসল পাওয়ার জন্য ৪০ কেজি ওজনের বস্তা বা আমাদের দেশে যে সিমেন্টের বস্তা পাওয়া যায় সেটাকে ব্যাবহার করে ব্যাগ গার্ডেনিং করা যায়।
গাছ লাগানোর বেড তৈরির ঝামেলা নেই প্রতিটি বেডই এক একটি আদর্শ বেড।
জায়গা বেশি থাকলে বস্তা একটির পাশে অন্যটি ফেলে বাগানের আয়তন বাড়ানো যায়।
যেভাবে করতে হবেঃ

১। পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পড়ে এমন জায়গায় মাটি ভর্তি ব্যাগগুলোকে সেট করতে হবে।
শাকসব্জি উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত সূর্যের আলোর প্রয়োজন,
তাই কমপক্ষে দিনের ৬ ঘণ্টা সূর্যালোক পড়ে এমন জায়গা নির্বাচন করা উচিত।
কিছু শাকসবজি যেমন লেটুস, পুদিনা সহ যারা সরাসরি সূর্যালোক সহ্য করতে পারেনা তাদের জন্য সেড বা ছাউনি তৈরির প্রয়োজন হতে পারে।
আর টমেটো গাছে সরাসরি সূর্যালোক সমস্যা হলে সেড করে দিতে হবে।
২। অতিরিক্ত পানি বের হওয়ার জন্য প্রতিটি বস্তায় নিচে আশেপাশে অন্তত ৪ থেকে ৬ ইঞ্চি জায়গা অন্তর স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে ছিদ্র করতে হবে।
৩। ব্যাগের মাঝ বরাবর ছুরি বা পেপার কাটার দিয়ে ব্যাগের আশেপাশে ২ ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা রেখে আয়তাকৃতির করে ব্যাগের মাঝের অংশটি উঠিয়ে ফেলতে হবে।
আশেপাশের এই ২ ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা মাটিকে ধরে রাখতে সহায়তা করবে।
৪। প্রতি ২.৫ কিউবিক ফুট মাটিতে ৫-১০-১০ অনুপাতে সার এবং ১ কাপ ডলোমাইট চুন মেশান।
৪০ কেজি ওজনের একটি ব্যাগ আনুমানিক ভাবে ৩/৪ কিউবিক ফুট।
 এই মিশ্রণটি ৪০ কেজি ওজনের ৩ টি ব্যাগের মাটিতে মেশানো যাবে।
অথবা আমরা টবে সাধারণ ভাবে সারমাটির মিশ্রণ যে অনুপাতে করি ঠিক সে অনুপাতে মাটি তৈরি করলেই হবে
 ( দুই ভাগ মাটির সাথে ১ ভাগ গোবর বা জৈব সার এবং ১ ভাগ পরিমাণ ইউরিয়া, টি এস পি, এমওপি এবং মিশ্র সার মেশাতে হবে) ।
৫। নিয়মঅনুযায়ী আদর্শ গভীরতায় প্রতিটি গাছের বীজ বপন করতে হবে। প্রতিটি ব্যাগে একের অধিক লেটুসের চারা আর রোপণ করা যাবে।
 আর বড় ধরণের গাছ যেমন টমেটো কিংবা স্কোয়াশ প্রতি ব্যাগে একটি করে লাগাতে হবে।
লেটুসের বীজ ছিটিয়ে দিয়ে তার উপর হালকা মাটির আবরণ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
আর টমেটো বা স্কোয়াশের মত বড় গাছ লাগাতে হলে মাঝ বরাবর দু তিনটি বীজ বপন করলেই হল।
৬। এবার পানি দেয়ার পালা। মাটি ভিজে পানি নিষ্কাশনের ছিদ্র দিয়ে পানি বের না হওয়া পর্যন্ত পানি ছেটাতে হবে।
ছিদ্র দিয়ে পানি চুইয়ে চুইয়ে বের হওয়ার অর্থ হল পানি ব্যাগের প্রতিটি অংশে ভালভাবে পৌঁছেছে।
গাছ হওয়ার পর সপ্তাহে দুই একবার পানি দিয়ে মাটি ভিজিয়ে দিলেই হল।
৭। দ্রুত গজিয়ে উঠা গাছগুলো ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যেই দুই পাতা মেলে উঠে।
৮। খড় বা পচনশীল বাকল দিয়ে গাছের আশে পাশে দিয়ে দিতে হবে। এতে গাছের গোঁড়া সবসময় পর্যাপ্ত ভেজা থাকবে। তবে এত বেশি পরিমাণ দেয়া যাবেনা যাতে গাছের আগা ঢেকে যায় এবং এত কাছযাবে না যাতে গাছের গোড়ায় পচন না ধরে। 

যা যা লাগবেঃ
 স্ক্রু ড্রাইভার ইউটিলিটি ছুরি সার ডলোমাইট চুন বীজ চারা 

আরো কিছু ব্যাগ গার্ডেনিং আইডিয়া






বাগান করার সহজতম উপায় বাগান করার সহজতম উপায় Reviewed by R@YH@N on Saturday, March 04, 2017 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.