বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)


৫৭০ খ্রীষ্টাব্দ : মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর জন্ম। বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী রবিউল আউয়ালের ৯ তারিখ সোমবার।
৫৭২ খ্রীষ্টাব্দ : দুবছর পর তিনি দুগ্ধ পান বন্ধ করেন। ধাত্রী মা হালিমার ঘরে অবস্থান। ৫৭৩-৭৫ খ্রীষ্টাব্দ : ৩/৪/৫ বছর বয়সে তাঁর বক্ষ বিদারণ হয়।
৫৭৫-৭৬ খ্রীষ্টাব্দ : ৫/৬ বছরবয়সকালে জননী আমিনার কোলে প্রত্যাবর্তন।
৫৭৬ খ্রীষ্টাব্দ : ৬ বছর বয়সে মায়ের সাথে নানার বাড়ি গমন এবং ফেরার পথে আবওয়া নামক স্থানে মা আমিনার মৃত্যু। মা হারা শিশুবালক।
৫৭৮ খ্রীষ্টাব্দ : ৮ বছর বয়সে দাদা আব্দুল মোত্তালিবের ইনতিকাল এবং চাচা আবু তালিবের উপর তাঁর প্রতিপালনের ভার ন্যাস্ত।
৫৮২ খ্রীষ্টাব্দ : ১২ বছর বয়সে আবু তালিবের সঙ্গে সিরিয়া গমন এবং খ্রিস্টান পন্ডিত ও পাদ্রী বুহাইরা কর্তৃক প্রতিশ্রুত শেষ নবী হিসেবে চিহ্নত।
৫৮৪-৮৫ খ্রীষ্টাব্দ : ১৫ বছর বয়সে হাবুল ফুজ্জার যুদ্ধে অংশ গ্রহণ।
৫৮৯-৯০ খ্রীষ্টাব্দ : খাদিজা এর বাণিজ্য প্রতিনিধিরূপে সিরিয়া ই ইয়ামান গমন।
৫৯৫ খ্রীষ্টাব্দ : ২৫ বছর বয়সে বিবি খাদিজার সাথে বিবাহ।
৬০৫ খ্রীষ্টাব্দ : হেরা গুহায় তাঁর ধ্যানমগ্ন জীবনের সূচনা হয়।
৬১০ খ্রীষ্টাব্দ : ৪০ বছর বয়সে নবুওয়াত লাভ। জিব্রাইল (আ.) কর্তৃক তাঁকে ওযু ও পবিত্রতা পদ্ধতি প্রদান। কোরআন নাযিলের সূচনা।
৬১০-১৩ খ্রীষ্টাব্দ : নবুওয়াতের প্রথম ৩ বছর গোপনে ইসলাম প্রচার। সর্বপ্রথম খাদীজা, যায়িদ, আলী ও আবু বকর এর ইসলাম গ্রহণ। এর পর উসমান, যুবায়েরসহ ৪০ জনের ইসলাম গ্রহণ।
৬১৪ খ্রীষ্টাব্দ : আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচারের আদেশ দান। নবী (স.) এর প্রতি আবু লাহাবের পাথর নিক্ষেপ ও সূরা লাহাব অবতীর্ণ।
৬১৫ খ্রীষ্টাব্দ : নবুওয়াতের ৫ম বর্ষে উসমান এর নেতৃত্বে ১৬ সাহাবীর দলেরআবিসিনিয়া হিজরত। উমর ও হামযা এর ইসলাম গ্রহণ।
৬১৬-৬১৯ খ্রীষ্টাব্দ : সমামচ্যুত। ৩ বছর আবদ্ধ জীবনযাপন।
৬১৯ খ্রীষ্টাব্দ : বিবি খাদিজা ও চাচা আবু তালিবের মৃত্যু।
৬২২ খ্রীষ্টাব্দ : মদীনায় হিজরতের জন্য সাহাবীগণের প্রতি নির্দেশ জারী। রাসূল (স.) ও আবু বকর এর মক্কা ত্যাগএবং গারে সাওরে আশ্রয়।

১ম হিজরী
৬২২ খ্রীষ্টাব্দ : ইয়াসরীবের পরিবর্তে মদীনা নামকরণ, মসজিদে নববী নির্মাণ,আযান, ওযু নামাযের নিয়ম ও জুম্মা প্রচলিত হয়।
২য় হিজরী :
যাকাত, রোজা, কিবলা, ঈদ-উল-ফিতর, ঈদ-উল- আযহা, হজ্জ্ব পালনের প্রত্যাদেশ লাভ ও বদরের যুদ্ধ। 
৩য় হিজরী :
মদীনায় ইসলামী প্রজাতন্ত্র স্থাপন, পৃথিবীরইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান মদীনা সনদ প্রণয়ন এবং ওহুদের যুদ্ধ।
৫-৬ হিজরী : পর্দা প্রবর্তিত, খন্দকের যুদ্ধ ও হুদায়বিয়ার সন্ধি।
৭ম হিজরী : খাইবার জয়, মুতার যুদ্ধ, মদ নিষিদ্ধ ঘোষণা।
৮ম হিজরী : মক্কা বিজয়, হুনাইনের যুদ্ধে ও তায়েফে ইসলামের বিজয় হয়।
৯ম হিজরী : ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক হজ্জের বিধান প্রবর্তন।
১০ম হিজরী : ১ লাখেরও বেশি সাহাবীসহ বিশ্বনবী (স.) বিদায় হজ্জ্বে আরাফাতের ময়দানে মানব জাতির জন্য দিকনির্দেশনামূল ক ঐতিহাসিকভাষণ দান।
১১ হিজরী/৬৩২ খ্রীষ্টাব্দ : নবী (স.) এর মাথা ব্যাথা ও জ্বরের সূচনা। ৬৩ বছর ৪ দিন বয়সে ১২ ই রবিউল আওয়াল সোমবার বিশ্বনবী (স.) এর ওফাত হয়। বুধবার ১৪ রবিউল আওয়ালভোর রাতে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।

মদীনা সনদ প্রকৃত প্রস্তাবে যা ছিলো পৃথিবীর লিখিত প্রথমসংবিধান। সেই প্রথম ইসলামী কল্যাণমূলক রাষ্ট্রটির প্রশাসনিক কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য সুসংগঠিত সচিবালয় ছিলো তার একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরছি।

রাষ্ট্রপ্রধানের দ্প্তর
১. নবীজী (স.) এর ব্যক্তিগত সচিব : হযরত হানযালা ইবনে আলরবি
২. পত্রলিখন ও অনুবাদ বিভাগ (সচিব) : হযরত আলী (রা.), হযরত মুয়াবিয়া (রা.) ও হযরত জায়েদ ইবনে সাবিত (রা.)
৩. সচিব : হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) ও হযরত শুরাহবিল ইবনে হাসান (রা.)
৪. সিলমোহরের আংটিটির সংরক্ষক : হযরত মুকরি ইবনে আবি ফাতিমা (রা.)
৫. অভ্যর্থনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত : হযরত আনাসইবনে মালিক (রা.) ও হযরত বারাহ(রা.)
৬. অর্থ ও হিসাব বিভাগ : হযরত মুয়ানকি ইবনে আবি ফাতিমা (রা.)
৭. জনস্বাস্থ্য বিভাগ : চিকিৎসক হারিস ইবনে সালাহ এবং আবিবার পুত্র
৮. শিক্ষা বিভাগ (স্বাক্ষরজ্ঞান) : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সাইদ (রা) ও আয়েশা সিদ্দিকা (রা.)
৯. যাকাত ও সদ্কা বিভাগ : হযরতযোবায়ের ইবনে আওয়াম ও যুহাইর
১০. বিজয়ের পর মক্কার প্রশাসক ছিলেন : হযরত ইত্তাব ইবনে উসাইদ (রা.)
১১. ইয়েমেনের দায়িত্বে ছিলেন:হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.)
১২. আম্মানের দায়িত্বে ছিলেন : হযরত আমর ইবনে আজ (রা.)
১৩. ওহি বিভাগ : হযরত আবু বকর এবং ওসমান (রা.) সহ চার খলিফা সবাই এবং হযরত জায়েদ ইবনে আজ সাবিত (রা.), উবায় বিন কাব (রা.), মুয়াবিয়া (রা.), খালেদবিন ওয়ালিদ (রা.), মুগিরা ইবনে শুবা (রা.) এবং আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াসহ দশজন মেধাবী-উচু মর্যাদার সাহাবী
১৪. প্রতিরক্ষা বিভাগ : নবীজী(স.) নিজে ছিলেন তবে অধিনায়ক হিসেবে ৭২টি নিয়োগদান করেছিলেন
১৫. জননিরাপত্তা বিভাগ : হযরতকায়েস ইবনে সায়াদ (রা.)
১৬. বিচারপতি হিসেবে : হযরত ওমর ও হযরত আলী (রা.) সহ আটজন মশহুর বিদগ্ধ সাহাবী।

অন্যান্য তথ্য :
 স্বয়ং নবীজী (স.) নিজ দায়িত্বে দুবার আদম শুমারী করিয়েছিলেন। মদীনা রাষ্ট্রের নাগরিকদের নাম রেজিস্টার বহিতে লিপিবদ্ধ ছিল। হযরত মুহাম্মদ (স.) এর যুদ্ধ/অভিযান ...
 ১. বদর যুদ্ধ - সৈন্য/সহচর সংখ্যা-৩১৩, সন-২য় হিজরী;
২. ওহোদ যুদ্ধ - সৈন্য/সহচর সংখ্যা-৭০০, সন-৩য় হিজরী;
৩. পরিখা যুদ্ধ - সৈন্য/সহচর সংখ্যা-৩০০০, সন-৫ম হিজরী;
৪. হোদায়বিয়া গমন - সৈন্য/সহচর সংখ্যা-১৪০০, সন-৬ষ্ঠ হিজরী;
৫. খাইবার যুদ্ধ - সৈন্য/ সহচরসংখ্যা-১৫০০, সন-৬ষ্ঠ হিজরী;
৬. মক্কা বিজয় - সৈন্য/সহচর সংখ্যা-১০,০০০, সন-৮ম হিজরী;
৭. হুনাইন যুদ্ধ- সৈন্য/সহচর সংখ্যা-১২,০০০, সন-৮ম হিজরী;
৮. রোমানদের সাথে যুদ্ধ- সৈন্য/সহচর সংখ্যা-৩০,০০০, সন-৯ম হিজরী;
৯. হজ্জ সমাপন - সৈন্য/ সহচর সংখ্যা-১,০০,০০০, সন-১০ম হিজরী;



 সূত্র : গভর্নমেন্ট আন্ডার দ্যা প্রফেট, ফুতহুল বুলদান, সিরাতে ইবনে হিশাম।
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) Reviewed by R@YH@N on Saturday, April 29, 2017 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.